নিজস্ব প্রতিবেদক:
দুইবার সিটি মেয়র হয়েছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। এর আগে ছিলেন পৌরসভার চেয়ারম্যান পরে মেয়র। তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগেও বেশ গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে তার। তিনি কখনো ধর্ম বিরোধী কথা বলেননি। ২০০৩ সালে থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আইভী শহরে বহু মসজিদ মাদ্রাসা করে দিয়েছেন। তার বাবা আলী আহমেদ চুনকা ছিলেন খুব ধার্মিক । তার বাবার নামে শহরে মাজার আছে। সেই মাজারে প্রতি বছর ওরস হয়, সেখানে অনেক মুসলমান মানুষ আসে, তার অনেক ভক্ত তৈরী হয়েছে। তাতে উত্তরপাড়াসহ কিছু লোকের হিংসা হচ্ছে। বাবার মতো আইভীও বিভিন্ন মাজারে গিয়ে জিয়ারত করেন। তিনি যে খাটি মুসলমান তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তারপরও একটি পক্ষ সম্প্রতি আইভীর একটি রাজনৈতিক বক্তব্যকে ধর্মীয় বক্তব্য বানানোর চেষ্টা হচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে তারা সেই বক্তব্যকে নিয়ে ধর্মীয় উত্তাপ ছড়াচ্ছে।
এসব ব্যাপারে গত ১৬ ডিসেম্বর দেওভোগে কথা বলেছেন আইভী। তিনি বলেন আমি মসজিদ করেছি অনেকগুলো। আমার বক্তব্যকে কাট কাট করে দিয়ে যারা ধর্মীয় মানুষের চেতনাকে আঘাত করতে চাচ্ছে । আমি সেই ধর্মীয় নেতাদের উদ্দেশে বলতে চাচ্ছি আল্লাহ্ কে ভয় করেন। মিথ্যা প্রচার থেকে বিরত থাকেন। না জেনে ,না বুঝে আমাকে অপবাদ দেবেন না। আমার দলীয় বক্তব্যকে ধর্মীয় বক্তব্যে পরিণত করবেন না। আমি বলতে চাই আমি আমার দলের প্রতি একশ ভাগ অনুগত রেখেই সকল দলের জন্য কাজ করেছি। আমি আমার দলের প্রতি আস্থা রেখেই অন্যান্য জায়গায় উন্নয়ন করেছি। আমি জয় বাংলা বলবোই বলবো। জয় বাংলা আমার চেতনা। জয় বাংলা আমার বিশ^াস। জয় বাংলা আমার মনের স্তম্ভ। জয় বাংলা জাতীয় শ্লোগান। এটা শুধু আওয়ামী লীগের শ্লোগান নয়। জয় বাংলা- কৃষক,শ্রমিক রণাঙ্গণের শ্লোগান।
একজন মুসলমান হিসেবে আমার ঈমান ,আমার বিশ^াস ,আমার ধর্ম – লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) । আমার নবী ছাড়া আমার কোনো সাফায়াত নাই। আমি যত ওয়াক্ত নামাজ পড়িনা কেনো নবী করিম (স) যদি সাফায়েত না করে পৃথিবীর কোনো মানুষ বেহেস্তে যেতে পারবে না। আমি আমার নবীজীকে ধারণ করে–আমি আমার ধর্ম পালন করি। সুতরাং কাট কাট করে আমার বক্তব্য বিকৃতি করবেন আর মানুষ আমাকে ভুল বোঝবে তা কোনো দিনও হবে না। কারণ আল্লাহ্ কোনো দিনও মিথ্যাকে জয়যুক্ত করে না। আল্লাহ সর্বদা সত্যের পথে থাকে। সুতরাং আমি আহবান জানাবো মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে সত্যের পথে আসুন। মোকাবেলা করতে চান মোকাবেলা করুন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এই দেশে এগিয়ে যেতে হবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সামনে রেখে। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমরা যদি ধারণ করতে না পারি তাহলে হতো আমরা এগিয়ে যেতে পারবো না। মহান স্বাধীনতার কথা মনে রেখে পৃথিবীর সব দেশ এগিয়ে গিয়েছে। আমরাও এগিয়ে যাবো। আমরা পিছিয়ে নাই।
উল্লেখ্য আগামী ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। মেয়র পদে ৮ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন । তার মধ্যে ইসলামী দলের প্রার্থী আছে। তারা হলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাসুম বিল্লাহ, খেলাফত মজলিসের সিরাজুল মামুন, খেলাফত আন্দোলনের মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন,অপর প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে জেলা বিএনপির আহবায়ক তৈমূর আলম খন্দকার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌস সোহেল মোল্লা, জয় বাংলা নাগরিক কমিটির মনোনিত প্রার্থী কামরুল ইসলাম বাবু, মহানগর বিএনপির কার্যকারি সদস্য সুলতান মাহমুদ।